ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩০, ২০২৪ ১:৪৬ পিএম

 

নির্মল বড়ুয়া মিলন :: তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) পরিষদ পরিচালনার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।গত ১৬ অক্টোবর-২০২৪ ইংরেজি তারিখ পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব কাজী মোহাম্মদ চাহেল তস্তুরীর স্বাক্ষরিত আদেশে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়।তবে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের আর্থিক কোনো ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।

আদেশে বলা হয়েছে, জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত সরকারের ২৮টি বিভাগের প্রশাসনিক কাজ পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে।তাদের দেয়া হয়নি আর্থিক ক্ষমতা। আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় পার্বত্য জেলা পরিষদ সমুহের উন্নয়ন কাজ এর বিল পরিশোধ করতে পাবছেন না সাথে জনসেবা মূলক সকল ধরনের কাজে হাত দিতে পারছেন না মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা।তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) পরিষদ কাছে হস্তান্তরিত বিভাগ গুলো নিয়মিত কার্যক্রম থেমে গেছে।
তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) পরিষদ এবং হস্তান্তরিত বিভাগ গুলিতে একধরনের বন্ধ্যাত্ব বিরাজ করছে।এ কারণে তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) পরিষদ পরিচালনার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতা সাথে সাথে আর্থিক ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন।

গত ৫ আগস্ট থেকে পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অনুপস্থিত রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করতে না পারায় জেলা পরিষদের পাশাপাশি হস্তান্তরিত বিভাগের প্রশাসনিক কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম শামিউল হক ছিদ্দিকী বলেন, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের প্রশাসনিক কাজ চালানোর জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের একটি অন্তর্বতীকালীন আদেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলা পরিষদের পুনর্গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন।
প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁরা এই দায়িত্ব পালন করবেন।উল্লেখ্য, সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, জেলা পরিষদ শাখা, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা গত ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ইংরেজি তারিখ স্মারক নং : ৪৬, ০৪২, ০৩৩, ০০, ০০, ১৮৭, ২০১১, ১৪৪৫ মুলে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জেলা পরিষদ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪”-এর ধারা ৩ দ্বারা সন্নিবেশিত ৮২ (২) ধারা মোতাবেক প্রশাসক, জেলা পরিষদ-এর কর্মসম্পাদনে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নিম্নরূপভাবে কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেয়া হয়।
প্রশাসক, জেলা পরিষদ, সভাপতি, উপপরিচালক, স্থানীয় সরকার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, উপপরিচালক, সমাজসেবা, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, জেলা শিক্ষা অফিসার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, সংশ্লিষ্ট জেলা সদস্য, উপপরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট জেলা, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলাসদস্য, নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (সকল) সদস্য, সহকারী প্রকৌশলী, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলা পরিষদ সদস্য-সচিব।

কমিটির কার্যপরিধিঃ (ক) উক্ত কমিটির সদস্যগণ জেলা পরিষদ সদস্যের ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।
(খ) জেলা পরিষদের অধিক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উক্ত কমিটির সুপারিশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।(গ) ন্যূনতম ৫০% সদস্যের উপস্থিতিতে কোরাম গঠিত হবে; যদি কোন সভায় কোরাম না হয়, তাহলে ঐ সভার সভাপতি এরূপ সভা মূলতবী করবেন অথবা যুক্তিসংগত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে প্রয়োজনীয় কোরাম হলে সভা পরিচালনা করবেন।রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে,উপসচিব মো. হাবিবুর রহমান এই আদেশে স্বাক্ষর করেন।জেলা পরিষদ সমুহের প্রশাসক নিয়োগ এর বিষয়কে স্বাগত জানিয়েছেন সাধারন জনগণ।আন্তবর্তীকালিন সরকার দেশের ৬১ টি জেলা পরিষদের সাথে মিল রেখে তিন পার্বত্য জেলা (রাঙামাটি খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) পরিষদ পরিচালনার সঠিক কৌশল বলে মতামত দিয়েছেন পার্বত্য জেলার স্থানীয় বিজ্ঞজনরা।
উল্লেখ্য, ১৮ সেপ্টেম্বর-২০২৪ ইংরেজি তারিখে খাগড়াছড়িতে ফার্নিচার ব্যাবসায়ী মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনার প্রতিবাদে ১৯ সেপ্টেম্বর-২০২৪ ইংরেজি তারিখ বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় পাহাড়ি-বাঙ্গালী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসত বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এঘটনা প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি জেলা সদর ও রাঙামাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। পাহাড়ি-বাঙ্গালী সহিংসতার ঘটনায় খাগড়াছড়িতে ৩জন ও রাঙামাটিতে একজনসহ ৪ জন নিহত হয়। ২০ সেপ্টেম্বর-২০২৪ ইংরেজি তারিখ রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সহিংসতার সময় মৈত্রী বিহারে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।এঘটনার পর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার ঘটনা তদন্তের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ নুরুল্লাহ নূরীকে কমিটির প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার ঘটনায় গঠিত ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ চলছে।পার্বত্য অঞ্চলের পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভাল, তবে রেশ কাটেনি। পরিস্থিতি মোটোমুটি ভাল । আবার একটি পক্ষ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত । এবস্থায় রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সমুহে বাইরের কাউকে চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ দেয়া হলে এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে নতুন ইস্যু তৈলী করে পার্বত্য অঞ্চলের পরিস্থিতি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণের বাইরে আবারও চলে যাওয়ার আশংখা করছেন অভিজ্ঞ মহল।

আন্তবর্তীকালিন সরকার সকল বিতর্কের উর্দ্ধে থেকে রাঙামাটি,খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সমুহে সারা দেশের ন্যায় প্রশাসক নিয়োগ দিলে এ সিদ্ধান্ত সময় উপযোগি সিদ্ধান্ত হবে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারনা।

পাঠকের মতামত

সাবেক এমপি জাফরসহ ৯৫ জনের বিরুদ্ধে বিষ্ফোরক আইনে পেকুয়া থানায় মামলা

         মুকুল কান্তি দাশ, চকরিয়া.. কক্সবাজারের পেকুয়ায় চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমসহ ৩৫ জনের নাম ...

প্রথমবারের মত উপ-উপাচার্য পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

         সাঈদ পান্থ, বরিশাল প্রথমবারের মত উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি) পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ...